October 22, 2024, 7:23 am

বরিশাল অঞ্চলে বিআইডব্লিউটিসির যাত্রীবাহী সার্ভিস প্রায় সবই বন্ধ!

বরিশাল অঞ্চলে বিআইডব্লিউটিসির যাত্রীবাহী সার্ভিস প্রায় সবই বন্ধ!

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বরিশাল অঞ্চলে বিআইডব্লিউটিসির যাত্রীবাহী সার্ভিস প্রায় সবই বন্ধ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র সপ্তাহে তিনদিন মোড়লগঞ্জ টু ঢাকা রুটের যাত্রী সার্ভিস চালু রয়েছে। আর বরিশাল থেকে মজুচৌধুরীহাট রুটে সি ট্রাক সার্ভিস বন্ধ রয়েছে প্রায় ছয় বছর ধরে। একইসাথে বরিশাল টু চট্টগ্রাম রুটে দীর্ঘ একযুগ পর যাত্রীবাহী সার্ভিস চালু হয়েও সম্প্রতি বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে  বরিশাল থেকে মজুচৌধুরী হাট রুটে অশান্ত মৌসুমে সিট্রাক সার্ভিস জরুরী হয়ে পরেছে।

এনিয়ে অনুসন্ধানসূত্রে জানা গেছে, ঝড়ো মৌসুমে উত্তাল নৌরুটগুলোতে চলাচলের জন্য বেক্রসিং সনদ সম্বলিত নৌযান প্রয়োজন হয়। অন্যথায় নৌবন্দর কতৃপক্ষ তা চলাচলের জন্য রুট পারমিট দেয়না। কারণ সমুদ্র মোহনা কিংবা বড় নদীগুলোতে চলাচলের জন্য শক্তিশালী ইঞ্জিন ও লঞ্চগুলোকে প্রায় ২শ ফুট লম্বা ও ৯/১০ফিট গভীরতা(ড্রাফট) সম্বলিত অবকাঠামো দরকার হয়। অন্যথায় স্বাভাবিক ঝড়েও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বরিশালে পারিজাত ও দোয়েল পাখি লঞ্চে বেক্রসিং সনদ রয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যে দোয়েল পাখি লঞ্চটি সেন্টমার্টিন রুটে চলাচল করে। আর কয়েকদিনের মধ্যেই পারিজাত লঞ্চটি মেরামতের কাজ শেষ করে সার্ভিসে যুক্ত হবে। বরিশাল থেকে মজুচৌধরুী হাট রুটটি বরবরাই যাত্রীবহুল। সেক্ষেত্রে একটি মাত্র লঞ্চ দিয়ে কি যাত্রী চাপ সামলানো সম্ভব জানতে চাইলে বরিশাল নৌবন্দরের ট্রাফিক পরিদর্শক মো:কবির বলেন, এতে সমস্যা হবেনা।

কারণ অনেক লঞ্চ ইলিশা পর্যন্ত চলাচল করে যেগুলোতে বেক্রসিং সনদ লাগেনা। আর ইলিশা থেকে মজুচৌধুরী হাট রুটে সি ট্রাক চালু রয়েছে। এমন ছন্দপতন যাত্রায়তো সময়ের অপচয়সহ ভোগান্তিওতো পারবে। বেক্রসিং সনদধারী লঞ্চ ছাড়াতো আমরা ঐরুটে চলাচলের জন্য রুট পারমিট দিতে পারবোনা যেহেতু ঐরুটে বরাবরই অশান্ত পরিস্থিতি থাকে। তবে বিআইডব্লিউটিসির কোন নৌযান বরিশাল থেকে সরাসরি যাত্রী সার্ভিস চালু করতে পারে।

কারণ তাদের নৌযানগুলো সমুদ্র উপকুলে চলাচল উপযোগী। এনিয়ে, এজিএম কে এম ইমরান বলেন, একসময় বরিশাল থেকে উক্ত রুটে ৩শ৫০জন যাত্রী ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন সি ট্রাক চলাচল করতো। কিন্তু যাত্রী সংকটের কারণে তা বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু আসছে অশান্ত মৌসুমে যাত্রীদের সুবিধা ও নিরাপত্তার জন্য সি ট্রাক সার্ভিস চালু করা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, আমরা এনিয়ে উপর মহলে লেখালেখি করেছি দেখি কি হয়।

তবে কয়েকটি সি ট্রাক আমাদের ডকে রযেছে মেরামতের জন্য। আর অপর শেখ কামাল নামে আরেকটি সি ট্রাক মনপুরা রুটে চলাচল করছে। এছাড়াও ইলিশা থেকে মজুচৌধুরীহাট রুটেও একটি সি ট্রাক চালু রয়েছে। কিন্ত বরিশাল রুটের সি ট্রাক বন্ধ হওয়ার জন্য যাত্রী সংকট ছাড়াও লঞ্চ মালিকদের সাথে আপনাদের কোন আতাত রয়েছে কিনা বিষয়ে এজিএম আরো বলেন, আমরা সিট্রাক দিয়েতো নিজেরা যাত্রী পরিবহন করিনা।

ঢাকা থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেয়া হয়। তারা আমাদেরকে নির্দিষ্ট পরিমান ভাড়া পরিশোধ ও পরিচালন ব্যয়বহন করে আমরা তাদেরকে নৌযান ও রুট দিয়ে দেই যাত্রী পরিবহনের জন্য। কিন্তু সিট্রাকগুলোতে জ্বালানি ব্যয় বেশি হয় তার অবকাঠামোর জন্যই এবং এর বিপরীতে একই রুটে লঞ্চে জ্বালানি খরচ কম হয়। যেকারণে লঞ্চে ভাড়াও কম নিতে পারে। আর সি ট্রাকে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। যেকারণে এই রুটে কেউ সি ট্রাক লীজও নিতে আসেনা।

অপরদিকে, বিআইডব্লিউটিসি বরিশাল দপ্তর খুলনার মোড়লগঞ্জ থেকে বরিশাল হয়ে ঢাকা রুটে জাহাজ  বাঙ্গালী, মধুমতির মাধ্যমে সপ্তাহে তিনদিন ট্রিপ চালু রেখেছে। শুধু তাই নয় বরিশাল টু চট্টগ্রাম রুটে বিআইডব্লিউটিসির একটি জাহাজ চলাচল করতো তাও বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ বরিশাল থেকে ১৯ঘন্টা লেগে যায় চট্টগ্রাম যেতে। এতোসময় নিয়ে যাত্রীরা ভ্রমন করতে ধৈর্য্য হাড়িয়ে ফেলে যেকারণে যাত্রী সংকট দেখা দিয়েছে এরুটটিতেও। এছাড়াও আসা-যাওয়ার পথে নাভ্যতা সংকটের কারণে জোয়ারের জন্য ২/৩ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় জাহাজ থামিয়ে। এতে যাত্রীদের মধ্যেও বিরক্তির উদ্রেক হয় বলে সুত্রে জানা গেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © All rights reserved © 2024 DailyBiplobiBangladesh.com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com